Victory Day Celebration 2017 সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

বিজয় দিবস উদযাপন ২০১৭

ভারতীয় হাই কমিশন

ঢাকা 

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি 

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিশিষ্ট বীরেরা বিজয় এবং তাদের সহযোদ্ধার চিরন্তন বন্ধন উদ্যাপনের জন্য ঢাকা ও কলকাতায় পুনরায় মিলিত হবেন। বিজয় দিবসে মুক্তিযোদ্ধা ও বীর সেনানিদের দুই তরফা ভ্রমণ শুরু হয় ২০০৫ সালে এবং এ-পর্যন্ত কলকাতা ও ঢাকায় যথাক্রমে বাংলাদেশের তিনশতাধিক মুক্তিযোদ্ধা এবং দেড়শো ভারতীয় বীর যোগদান করেছেন।

এ বছর ১৪-১৮ ডিসেম্বর ২০১৭ কলকাতায় ভারত সরকারের আমন্ত্রণে বিজয় দিবস উদ্যাপন অনুষ্ঠানে ৩০-সদস্যের মুক্তিযোদ্ধা এবং বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনির ৬জন কর্মকর্তা তাদের সঙ্গীদের নিয়ে যোগদান করবেন। বাংলাদেশ সরকারের গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব মোশারফ হোসেন এমপি-র নেতৃত্বে এ প্রতিনিধিদলে তিনজন সাংসদ, আইসিটি-র একজন অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনির অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাবৃন্দ, কূটনীতিক, প্রবীণ আমলা এবং সুশীল সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা অন্তর্ভুক্ত থাকছেন। প্রতিনিধিরা তাঁদের সম্মানে দেওয়া সংবর্ধনা ও আনুষ্ঠানিক কর্মকান্ডে যোগদান করবেন এবং ভারতীয় বীর সেনানিদের সঙ্গে মত বিনিময়ের সুযোগ পাবেন। তাঁরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি ও অন্যান্য ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন করবেন।

অনুরূপভাবে ১৪ ডিসেম্বর ২০১৭ বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে ২৭ জন ভারতীয় বিশিষ্ট যুদ্ধবীর এবং ৪জন কর্মরত অফিসার বিজয় দিবেসের অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য তাঁদের সঙ্গীদের নিয়ে ঢাকায় এসে পৌঁছবেন। এখানে অবস্থানকালে তাঁরা আনুষ্ঠানিক কর্মকান্ডে যোগদান এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনির প্রধান এবং সশস্ত্রবাহিনি বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। তাঁরা মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ওয়ার কোর্স ফাউন্ডেশন, ঢাকা ক্লাব এবং ভারতীয় হাই কমিশনের দেওয়া আলাদা আলাদা সংবর্ধনা গ্রহণকালে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন। প্রতিনিধিদলটি বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন এবং মুক্তিযুদ্ধের কয়েকটি যুদ্ধক্ষেত্রও পরিদর্শন করবেন।

ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল জয় ভগবান সিং যাদব পিভিএসএম, এমভিএসএম, ভিআরসি, ভিএসএম (অব.)। তিনি ১৯৬৫ সালে পকিস্তানের বিরুদ্ধে এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ১৯৭১ সালে বগুড়ার যুদ্ধে বীরত্বের জন্য 'বীর চক্র' পুরস্কার লাভ করেন। এ যুদ্ধে তিনি আহতও হয়েছিলেন।

উইং কমান্ডার বিনোদ কুমার নেব,  'বীর চক্র ও বার’, ছিলেন ১৯৭১ সালে ভারতীয় বিমানবাহিনির এক তরুণ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট। ১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর তিনি ছিলেন একটি কমব্যাট ফরমেশনের অংশ, যা ঢাকা শহরের ওপর ৩টি সাব্রে জেটের আক্রমণের শিকার হয়। যুধ্যমান ডগফাইটে তিনি একটি সাব্রে জেট ভূপাতিত করেন। পরে তিনি কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও সিলেট সেক্টরে একাধিক ফাইটার মিশনে অংশগ্রহণ করেন। তিনিও আগে ১৯৬৫ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ১৯৬৫ ও ১৯৭১ সালে দু’বার বীরত্বসূচক 'বীর চক্র' র প্রাপক।

কমোডর আর এন শর্মা (অব.) ১৯৭১ সালে ছিলেন একজন লেফটেন্যান্ট কমান্ডার। আইএনএস বিক্রান্ত-এ অবস্থানকালে তিনি ভারতীয় ইস্টার্ন নেভাল ফ্লিটের যুদ্ধ জাহাজ ও বিমানের সমন্বিত অভিযানের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। যুদ্ধের পর তিনি চট্টগ্রাম বন্দরের মাইন অপসারণ অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

এসব কর্মকান্ডে বীর যোদ্ধারা একতাবদ্ধ হয়েছিলেন এবং কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন। তাঁদের অভিজ্ঞতার বর্ণনা করার সময় তাঁরা গৌবর, ত্যাগ ও চেতনার কথা বলবেন যখন উভয় দেশের মানুষ সেই কঠিন সময়ে একে-অপরের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁদের সৌভ্রার্তৃত্ব, সাহসিকতা ও ত্যাগের বন্ধন সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং আগামীদিনে তা উভয়দেশের সামরিক বাহিনি ও জনগণের বন্ধন অটুট রাখবে।

ঢাকা, ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৭   

 

****