রাজশাহী সিটি মেয়র আয়োজিত নাগরিক আভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে ভারতীয় হাই কমিশনারের ভাষণ বিবৃতি ও বক্তৃতা

রাজশাহী সিটি মেয়র আয়োজিত নাগরিক আভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে ভারতীয় হাই কমিশনারের ভাষণ

ভারতীয় হাই কমিশন

ঢাকা

রাজশাহী সিটি মেয়র আয়োজিত নাগরিক আভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে ভারতীয় হাই কমিশনারের ভাষণ

[রাজশাহী, ২৯ জানুয়ারি ২০১৭]

 

মাননীয় জনাব মোঃ শাহরিয়ার আলম, সংসদ সদস্য এবং সম্মানিত পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী,

জনাব ফজলে হোসেন বাদশাহ, এমপি,রাজশাহী,

জনাব খাইরুজ্জামান লিটন, প্রাক্তন মেয়র,                                                                                                        

জনাব নিজামুল আজিম, রাজশাহীর ভারপ্রাপ্ত মেয়র,

জনাব এ.বি.এ.ম শারিফ উদ্দিন, সিইও, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন,

শ্রী অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায়, সহকারী ভারতীয় হাই কমিশনার এবং

আমার অন্যান্য সহকর্মী বৃন্দ,

সম্মানিত অতিথি বৃন্দ,

ভারতে আমাদের কাছে রাজশাহী হচ্ছে বাংলাদেশে প্রবেশদ্বার। তাই আমি প্রথম এই শহরে আসতে পেরে খুবই আনন্দিত ।

আমরা আরও গর্বিত যে ১৯৭৪ সাল থেকে সহকারী হাই কমিশন-এর আকারে এখানে আমাদের কূটনৈতিক তৎপরতা রয়েছে। রাজশাহী  বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ঋত্বিক ঘটক এবং বিখ্যাত ইতিহাসবীদ যদুনাথ সরকার-এর মত নামকরা ভারতীয়দের আবাসস্থল।

রাজশাহী বাংলাদেশেরও অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিদের জন্মস্থান, এদের মধ্যে রয়েছেন- শাহীদ এ.এইচ.এম. কামারুজ্জামান- স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম  স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী  এবং ১৯৭৫ সালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জেল হত্যার চার শহীদের একজন; এবং হাসান আজিজুল হক যিনি একজন বিখ্যাত ছোট গল্প লেখক।

রাজশাহীর ক্ষেত্রে আমাদের স্মৃতি ফিরে যায় শুধুমাত্র ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়, যখন ভারত ও বাংলাদেশ উভয় দেশেই দেশের স্বাধীনতা ও একটি নতুন দেশ বাংলাদেশ লাভের জন্য একত্রে রক্ত দিয়েছে, যা ইতিহাসে বিরল।

ভারত সরকারের অধীনে  ২১ কোটি ৯৫  লাখ টাকার আর্থিক সহায়তায় রাজশাহী শহরের টেকসই উন্নয়নের জন্য আমরা মাত্র রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন-এর সাথে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছি। এই পরিকল্পনার আওতায় রয়েছে রাজশাহী সাংস্কৃতিক সংঘের অবকাঠামো পুননির্মাণ; পদ্মা গ্রন্থাগার ভবনের নির্মাণ, জলধার সংরক্ষণ; নগরীর বিভিন্ন সড়কের ফুটপাথ নির্মাণ এবং নগরীর কয়েকটি মন্দিরের সংরক্ষন।   রাজশাহীর নাগরিক পরিবেশ উন্নয়ন ও সৌন্দর্যবর্ধনে এসব প্রচেষ্টা সামান্য হলেও অবদান রাখবে, এতে কোন সন্দেহ নেই।

জনাব মেয়র,

আমাদের উভয় দেশের মানুষের স্মৃতিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর ভূমিকা চির জাগরুক থাকবে। তাঁরা আমাদের দুই দেশের জনগণের মধ্যে চিরন্তন বন্ধুত্বের ভিত্তি স্থাপন করে গেছেন। আজ আমরা ভাগ্যবান যে, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে ভারত-বাংলদেশ সম্পর্ক এক নজরবিহীন নতুন উচ্চতায় উপনীত হয়েছে।

আমি মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী জনাব শাহরিয়ার আলমকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তার শত ব্যস্ততা থাকা সত্ত্বেও এই অনুষ্ঠানকে আলোকিত করার জন্য। আমরা খুবই কৃতজ্ঞ যে তিনি ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে ব্যক্তিগত ভাবে বিবেচনা করছেন এবং এই ঘনিষ্ঠ ও ঐতিহাসিক সম্পর্কটি আরও দৃঢ় ও উন্নত করতে সম্পূর্ণ নিবেদিত। আমি রাজশাহীর সম্মানিত এমপি-দের তাদের মূল্যবান উপস্থিতির জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি ইআরডি-এর প্রশংসা না করে পারছি না, যার সহযোগিতায় আজকের এই সমঝোতা স্মারক অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে পরিসমাপ্ত করা সম্ভব হয়েছে। এখন আমরা এই সমঝোতা স্মারকটিকে ব্যবহার করে পরিকল্পনা অনুযায়ী সময় মত কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব। আমি নিশ্চিত যে, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন, যেটিকে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, তা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সম্পন্ন করবে যাতে স্থানীয় বাসিন্দারা আরও বেশী নাগরিক সুবিধা পান।

আমি মাননীয়  মেয়রকে ধন্যবাদ জানাই এই নাগরিক অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করার জন্য। আমি সত্যিই অনেক কৃতজ্ঞ আমাকে রাজশাহী শহরের চাবি প্রদানের জন্য। আমি ভারতীয় সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে এটি গ্রহণ করে সম্মানিত বোধ করছি।

আমি আজকের উপস্থিত সকল অতিথিদের শুভ কামনা করে এবং তাদের সকলের সামনের দিন গুলো সফল হোক এই কামনা করে শেষ করছি।

ধন্যবাদ।

****