Remarks by High Commissioner of India, Mr. Harsh Vardhan Shringla at Netaji Subhash Chandra Bose’s 121st Birth Anniversary চলমান ঘটনাবলী

নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর ১২১তম জন্মবার্ষিকীতে হাই কমিশনারের বক্তব্য

ভারতীয় হাই কমিশন

ঢাকা

 

নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর ১২১তম জন্মবার্ষিকীতে হাই কমিশনারের বক্তব্য

[২৩ জানুয়ারি ২০১৮, ঢাকা]

 

জনাব আমির হোসেন আমু, মাননীয় শিল্পমন্ত্রী, বাংলাদেশ

জনাব আশরাফুল আলম, এডিটর ইন চিফ, বহুমাত্রিকডটকম

সম্মানিত অতিথিবর্গ ও বন্ধুগণ

নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর ১২১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করার জন্য আমি বহুমাত্রিক ডট কম-কে এবং আরো সুনির্দিষ্টভাবে এডিটর ইন চিফ জনাব আশরাফুল আলমকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি । 

নেতাজি ভারতের স্বাধিকার আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা। তাঁর সম্মোহনী ব্যক্তিত্ব ভারতের অসংখ্য তরুণকে উদ্দীপ্ত করেছিল। তিনি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (আইএনএ) গঠন করেন এবং নেতাজি উপাধিতে ভূষিত হন। 

নেতাজি মানুষের মনে গভীর ছাপ রেখে গিয়েছেন। তাঁর বীরত্বের খ্যাতি মানুষের মুখে মুখে। 

বাংলাদেশেও তিনি পরিচিত ও সম্মানের পাত্র জেনে আমি খুশি হয়েছি। আপনারা অনেকেই হয়ত জানেন, তিনি বর্তমান বাংলাদেশের ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মাদারীপুর, সিলেট, বরিশালসহ অনেক স্থান ভ্রমণ করেছেন। ১৯২০ সালে তিনি ঢাকায় এসেছিলেন এবং ১৯৪০ সালের মে মাসে অন্যান্য স্থানে ভ্রমণ করেন। 

বিশেষত কলকাতা থেকে ছদ্মবেশে আফগানিস্তানের কাবুলে দু:সাহসী পলায়নের আগে তাঁর সর্বশেষ জনসভা ছিল ঢাকাতে, ২০ মে ১৯৪০ সালে। এরপর তিনি পূর্ব বাংলাতে আসেন এবং ভারতের স্বায়ত্ত্বশাসন বিষয়ে অনেকগুলো তেজোদীপ্ত বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি ভারতকে ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্ত করতে সশস্ত্র সংগ্রামের আশ্রয় নিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হন এবং ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস ত্যাগ করেন। 

আমি জানতে পেরেছি, নেতাজির নামে নারায়ণগঞ্জে একটি রেস্তোরাঁ আছে। কারাগারে নেয়ার পথে সেখানে বসে তিনি চা পান করেছিলেন। আশা করি শীঘ্রই আমি সে ক্যাফে পরিদর্শন করব। 

গতকাল ছিল সরস্বতী পূজা। এ প্রসঙ্গে বলি, নেতাজিও মেধাবী ছাত্র ছিলেন। ১৯১১ সালে তিনি সারা কলকাতায় মেট্রিকুলেশন পরীক্ষার ২য় হন এবং প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন। এরপর ইংল্যান্ডের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যান। তিনি আইসিএস পরীক্ষায় ৪র্থ হয়েও বৃটিশ সরকারের অধীনে চাকরি নিতে অস্বীকার করেন। 

নেতাজি আমাদের জন্য একটি দীর্ঘস্থায়ী উত্তরাধিকার রেখে গেছেন। তাঁর সাহস, সংকল্প, দৃঢ়তা আজও তরুণদের অনুপ্রাণিত করে।

নেতাজির জীবনী নিয়ে অনেক ডকুমেন্টারি, টিভি সিরিজ ও চলচ্চিত্র তৈরি হয়েছে। ২০০৪ সালে বিখ্যাত পরিচালক শ্যাম বেনেগাল নেতাজির জীবনী নিয়ে ‘নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু: দ্য ফরগটেন হিরো’ চলচ্চিত্র তৈরি করেন যা ভারত ও আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সমালোচকদের বিপুল প্রশংসা অর্জন করে। কিংবদন্তি এই নেতার স্মরণে কলকাতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নামকরণ করা হয়েছে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।

তাঁর একটি বিখ্যাত উক্তি ছিল ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব’। তাঁর আরেকটি বিখ্যাত উক্তি ‘দিল্লি চল’ যেটা ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মির সেনাদের উদ্বুদ্ধ করতে ব্যবহার করতেন। ‘জয় হিন্দ’ বা ‘ভারতের মহিমা!’ তার আরেকটি স্লোগান যা পরে ভারত সরকার ও ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী দ্বারা গৃহীত হয়। তাঁর অন্যান্য স্লোগান ছিল ইত্তেফাক, ইতেমাদ, কুরবানি। আইএনএ `ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ স্লোগানও ব্যবহার করত।

নেতাজির জন্মবার্ষিকী উদযাপনে অংশ নেয়fর জন্য আমি মাননীয় শিল্পমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। বহুমাত্রিকডটকমকেও ধন্যবাদ জানাচ্ছি এরকম গুরুত্বপূর্ণ একটি আয়োজনের জন্য। এছাড়া যারা অবিভক্ত ভারতের এই মহান দেশপ্রেমিক নেতার কথা ও ইতিহাস জানতে এগিয়ে এসেছেন তাদেরকেও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

****