High Commissioner’s Remarks at University of Dhaka চলমান ঘটনাবলী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হাই কমিশনারের বক্তব্য

ভারতীয় হাই কমিশন

ঢাকা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হাই কমিশনারের বক্তব্য

[২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮] 

অধ্যাপক ড. মুহম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়,

অধ্যাপক ড. দুলাল ভৌমিক, সংস্কৃত বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়,

ড. চন্দনা রানী বিশ্বাস, সভাপতি, সংস্কৃত বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়,

ড. নিরঞ্জন অধিকারী, সচিব, বাংলাদেশ সংস্কৃত ও পালি শিক্ষা বোর্ড,

অধ্যাপক শ্রী পাণ্ডুরাঙা ভট্ট, প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক, সমনবয় একাডেমি ফর এক্সিলেন্স (এসএএফই)

ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ,

বিশিষ্ট অতিথিবর্গ, গণমাধ্যমের বন্ধুবর্গ, ভদ্রমহিলা ও মহোদয়বৃন্দ।

নমস্কার, আসসালামু আলাইকুম, সুপ্রভাত।

আজ ঢাকায় এই অনন্য ঘটনার সাক্ষী হতে পেরে আমি আনন্দিত। আমি এইমাত্র বিদগ্ধ পণ্ডিত  ও আমাদের আজকের সম্মানিত অতিথি বক্তা অধ্যাপক ভট্টর “একুশ শতকে সংস্কৃতর প্রাসঙ্গিকতা” শীর্ষক তুখোড় বক্তৃতাটি শুনলাম। আমি নিশ্চিত, আমার মত সমবেত সুধীমণ্ডলী তাঁর মনোগ্রাহী ও চিন্তা-উদ্রেককারী বক্তৃতাটি উপভোগ করেছেন। আমাদের আমন্ত্রণ গ্রহণ করে ঢাকা এসে এমন মননশীল বক্তৃতা দিয়ে আমাদের আলোকিত করায় আমি অধ্যাপক ভট্টকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি আমাদের একান্ত ঘনিষ্ট অংশীদার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশেষ করে সংস্কৃত বিভাগকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই এখানে এই বক্তৃতাটির আয়োজন করার জন্য। ঘটনাক্রমে এটিই তাঁর ঢাকায় প্রথম বক্তৃতা; আগামী কয়েকদিনে তিনি বিভিন্ন স্থানে আরও বক্তৃতা করবেন।

অধ্যাপক ভট্টর সঙ্গে আমার দেখা হয় ব্যাংককে কয়েক বছর আগে। তিনি তখন ব্যাংককের সিল্পকর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতের আইসিসিআর চেয়ার অধ্যাপক। আমি তখন সংস্কৃত, ভারততত্ত্ব ও নেতৃত্ব সমীক্ষার মত বৈচিত্র্যময় ক্ষেত্রে তাঁর বিশেষজ্ঞতার বিস্ময়কর ব্যাপকতা সম্পর্কে জানতে পারি। আমি অনুভব করি যে, যেহেতু ভারত ও বাংলাদেশ বর্তমানে আমাদের ঘনিষ্ঠতম বন্ধুত্বের সোনালী অধ্যায় উদযাপন করছে, উভয়েই ঐতিহাসিক ও ভাষাগতভাবে সংস্কৃতর সঙ্গে গভীর বন্ধনে আবদ্ধ এবং বাংলাদেশ যেহেতু জানে, ভাষা কোন দেশ ও তার মানুষের পক্ষে কতখানি গুরুত্বপূর্ণ, তখন অধ্যাপক ভট্টর ঢাকায় আগমন খুবই অর্থবহ হবে। তিনি আমাদের সঙ্গে তাঁর গবেষণা, অভিজ্ঞতা, সর্বোপরি গভীর জ্ঞানভিক্তিক অন্তর্জ্ঞান বিনিময় করতে পারবেন। আজকের বক্তৃতা প্রমাণ করল, আমার ভাবনা যথার্থই ছিল। 

আমি আপনাদের জানাতে চাই যে, ভারতীয় হাই কমিশন বিগত কয়েক বছর যাবত বাংলাদেশে সংস্কৃতর ব্যাপারে সহায়তা করে যাচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে আমরা প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সংস্কৃত বিভাগে বইপত্র, শিক্ষা উপকরণ, কম্পিউটার ও অন্যান্য শিক্ষা সহায়ক সামগ্রী প্রদান করেছি। ২০১৭-র অক্টোবরে মাননীয়া বিদেশমন্ত্রী শ্রীমতি সুষমা স্বরাজের বাংলাদেশ সফরকালে হাই কমিশন ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগে ল্যাপটপ, কম্পিউটার, প্রিন্টার, ফটোকপি মেশিন, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ও বিষেশভাবে কেনা বই উপহার দিয়েছিল।

বাংলাদেশে সংস্কৃত প্রসারে আরও সহায়তা দিতে আমি ও আমার সহকর্মীরা এ বছরের প্রথমদিকে সংস্কৃত ও পালি শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কয়েকবার বৈঠক করেছিলাম এবং বাংলাদেশে সংস্কৃত প্রতিষ্ঠানসমূহে কীভাবে অধিকতর সহায়তা প্রদান করা যায়, সে ব্যাপারে আলোচনা করেছিলাম। তখন জানতে পারি যে, ৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া সারাদেশে ১২৯টি প্রচলিত সংস্কৃত প্রতিষ্ঠান (টোল/চতুষ্পাঠী) চালু রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন পাঠ্যক্রমে (আদ্য, মধ্য এবং উপাধি) প্রায় ১৯ হাজার শিক্ষার্থী সংস্কৃত শিক্ষায় নিয়োজিত। যদিও এসব ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন, তবু ভারতীয় হাই কমিশন এসব ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সমর্থন দিতে প্রস্তুত। এর আগে, ২০০৬ সালে হাই কমিশন সংস্কৃত ও পালি শিক্ষা বোর্ডকে ২০ লাখ টাকার একটি মঞ্জুরি প্রদান করেছিল। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অধিকতর সহায়তা প্যাকেজ দিতে আমরা বোর্ডের সঙ্গে একান্তভাবে কাজ করে যাচ্ছি। অবকাঠামো সমর্থন ও মানোন্নয়নে সঠিকভাবে কী প্রয়োজন, তা নির্ধারণ করতে একটি পেশাদার জরিপ চালানো হচ্ছে।

একইসঙ্গে, আমরা সংস্কৃত বিভাগ প্রতিষ্ঠায় আমাদের সহায়তা অব্যাহত রেখেছি। হাই কমিশন সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কৃত শিক্ষার শ্রেণিকক্ষ মানোন্নয়নের একটি প্রকল্প হতে নিয়েছে, যা প্রায় সমাপ্তির পর্যায়ে বলে আমাকে জানানো হয়েছে। বাংলাদেশে সংস্কৃত শিক্ষার প্রসারে ভারতীয় হাই কমিশন সর্বান্তঃকরণে সাহায্য অব্যাহত রাখবে এবং আপনাদের সকলের অংশীদার হবে। 

আমি আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে এই চমৎকার অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য এবং অধ্যাপক ভট্টকে তাঁর অতিশয় তথ্যবহুল ও প্রাসঙ্গিক বক্তৃতা প্রদানের জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ।