বাংলাদেশে টিভিএস থ্রি হুইলার বাজারজাতকরণের জন্য ইফাদ-টিভিএস অংশীদারিত্ব উদ্বোধনীতে ভারতীয় হাই কমিশনার শ্রী হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার বক্তব্য
বিবৃতি ও বক্তৃতা

বাংলাদেশে টিভিএস থ্রি হুইলার বাজারজাতকরণের জন্য ইফাদ-টিভিএস অংশীদারিত্ব উদ্বোধনীতে ভারতীয় হাই কমিশনার শ্রী হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার বক্তব্য

ভারতীয় হাই কমিশন

ঢাকা

 

১১ জানুয়ারি ২০১৮বাংলাদেশে টিভিএস থ্রি হুইলার বাজারজাতকরণের জন্য ইফাদ-টিভিএস অংশীদারিত্ব উদ্বোধনীতে ভারতীয় হাই কমিশনার শ্রী হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার বক্তব্য

বাংলাদেশের মাননীয় নৌ পরিবহন মন্ত্রী জনাব শাহজাহান খান

ইফাদ গ্রুপের সভাপতি জনাব ইফতেখার আহমেদ টিপু

টিভিএস মোটর কোম্পানির সিনিয়র সহ-সভাপতি শ্রী আরদিলিপ

ইফাদ মোটরস লিমিটেড এর সহকারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব তাসকিন আহমেদ

গণমাধ্যমের বন্ধুরা

ভদ্রমহিলা এবং মহোদয়গণ

টিভিএস মোটর নির্মিত থ্রি হুইলার (সিএনজি/এলপিজি/ডিজেলবাজারজাতকরণের জন্য ইফাদ গ্রুপ (ইফাদ মোটরস লিমিটেডএবং টিভিএস মোটর কোম্পানির অংশীদারিত্ব উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আসতে পেরে আমি আনন্দিত। এছাড়াও আমি খুব খুশি যেটিভিএস মোটর তাদের নতুন থ্রি হুইলার ‘টিভি্এস কিং ডিলাক্স’ উদ্বোধন করছে।

অটোমোটিভ কোম্পানিগুলোর জন্য বাংলাদেশের বাজার খুবই সম্ভাবনাময়। গত এক দশকে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বার্ষিক ৬ শতাংশেরও বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ বছর এ প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৪ শতাংশ হতে পারে বলে আশা করা যাচ্ছে। দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং সড়ক অবকাঠামো উন্নয়নের সাথে সাথে বাংলাদেশে থ্রি হুইলারসহ বাণিজ্যিক এবং যাত্রীবাহী যানবাহন এর চাহিদা দ্রুত বেড়ে চলেছে। ভারতের মতোই বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকাগুলোতে তিন চাকার যানবাহনগুলো পরিবহনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে।

সামর্থদক্ষতা ও ভৌগোলিক নৈকট্যের বিবেচনায় বাংলাদেশের অটোমোবাইলের চাহিদা পূরণে ভারতীয় অটোমোটিভ ইন্ডাস্ট্রি আদর্শ অবস্থানে আছে। বছরে ২৫ মিলিয়নের বেশি গাড়ি উৎপাদন এবং ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রায় ৩.৫ মিলিয়ন গাড়ি রপ্তানি করে ভারত বিশ্বের ষষ্ঠ অটোমোবাইল নির্মাতা দেশ। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ভারতের জিডিপির ৭ দশমিক ১ শতাংশ এসেছে অটোমোটিভ সেক্টর থেকে।

ভারত বিশ্বের সবচেয়ে বড় থ্রি হুইলার নির্মাতা দেশ যেটি বছরে ৮ দশমিক ৭ লক্ষ গাড়ি উৎপাদন করে এবং বছরে ৩ দশমিক ৫ লক্ষ গাড়ি রপ্তানি করে। ভারতীয় শিল্প থ্রি হুইলারের জন্য ভারত স্টেজ ৪ এমিশন নীতিমালা মেনে আরও পরিবেশবান্ধব গাড়ি তৈরি করছে এবং ডিজেলের পরিবর্তে আরও পরিশুদ্ধ জ্বালানি যেমনসিএনজিএলপিজি ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছে। ভারত সরকারও ২০৩০ সাল নাগাদ শতভাগ বৈদ্যুতিক যাননির্ভর দেশে পরিণত করার জন্য উৎসাহিত করছে।

বাংলাদেশের বাজার ভারতীয় অটোমোটিভ কোম্পানিগুলোর নজর কেড়েছেযারা বাংলাদেশে শুধুমাত্র গাড়ি রপ্তানি বা বিনিয়োগ করছে না বরং তারা এখানে কারখানা নির্মাণেও বিনিয়োগ করছে। গতবছরেই ইফাদ গ্রুপের সাথে মিলে ধামরাইতে একটি ট্রাক সংযোজন কারখানা চালু করেছে অশোক লেল্যান্ড। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহন চুক্তির আওতায় ইফাদ গ্রুপ মংলা বন্দর দিয়ে অশোক লেল্যান্ড গাড়ি আমদানি শুরু করেছে।

ভারতের শীর্ষস্থানীয় টু/থ্রি হুইলার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টিভিএস মোটরস্ যা ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের টিভিএস গ্রুপের অন্যতম অংগ-প্রতিষ্ঠান যেটি বাংলাদেশের টু হুইলার বাজারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। থ্রি হুইলার বাজারেও তারা সক্রিয় রয়েছে। ইফাদ গ্রুপের সাথে অংশীদারিত্ব এই শিল্পকে আরও প্রসারিত করবে। দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য সম্পর্কের আরও একটি বড় উদাহরণ এটি। গত কয়েক বছরে আমাদের দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্যে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন কোম্পানি দুই দেশে বিনিয়োগ ও যৌথ বাণিজ্যের সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করছে। আমি টিভিএস এবং ইফাদ গ্রুপকে তাদের যৌথ প্রকল্পের সাফল্য কামনা করছি।

আমি মাননীয় নৌ পরিবহন মন্ত্রীকে আজকের অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তিনি ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রীর অন্যতম সমর্থক। তার নেতৃত্বে জলপথ এবং পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে আমরা অনেকগুলো উদ্যোগ নিতে সক্ষম হয়েছি। সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহন চুক্তির আওতায় ২০১৬ সালে মাননীয় মন্ত্রী চট্টগ্রাম থেকে কৃষ্ণপটনমে প্রথম পণ্যবাহী জাহাজের আনুষ্ঠানিক চলাচল উদ্বোধন করেন। একই বছরে তিনি আশুগঞ্জ নদীবন্দর দিয়ে ত্রিপুরাগামী প্রথম পণ্যবাহী চালানটি গ্রহণ করেন। ভারত তৃতীয় ঋণচুক্তির আওতায় মংলা বন্দরচট্টগ্রাম বে টার্মিনাল এবং পায়রা বন্দরের উন্নয়নে সহায়তা করছে। আমরা ভারত –বাংলাদেশ সীমান্তে স্থল বন্দর অবকাঠামো উন্নয়নেও কাজ করছি।

সবাইকে ধন্যবাদ।

****